বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ইতিহাস
১৯৬১ সালে ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদ নামে দু’টি অনুষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় তখন এর নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঘোষনা করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই পশুপালন অনুষদ নামে তৃতীয় অনুষদের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ১৯৬৪-৬৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদ এবং ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হয়।
[১]অবস্থান
ময়মনসিংহ শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম প্রান্তে প্রায় ১২০০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। রাজধানী ঢাকা থেকে ১২০ কিলোমিটার উত্তরে এ ক্যাম্পাসের অবস্থান।
[১]ভৌত স্থাপনা
বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল প্রশাসন ভবনসহ বিভিন্ন অনুষদীয় ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, ২০০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, সম্প্রসারিত ভবন, জিমনেসিয়াম, স্টেডিয়াম, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, জিটিআই ভবন এবং শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ১৩টি হল আছে। যার মাঝে ৪টি হল ছাত্রীদের জন্য।
[১] এছাড়াও রয়েছে ড. ওয়াজেদ মিয়া ডরমিটরী।
পুরাতন লোগো
উপাচার্য
- লুৎফুল হাসান (২০১৯-বর্তমান)
অনুষদ এবং বিভাগসমূহ
বাকৃবি ক্যাম্পাসবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার মসজিদ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহিদদের তালিকার ভাস্কর্য
অনুষদ ভবন
ভেটেরিনারি অনুষদ
ভেটেরিনারি অনুষদ আটটি বিভাগ নিয়ে গঠিত। সেগুলো হল -
- শারীরস্থান এবং তন্তুবিন্যাসবিদ্য হিস্টোলজি বিভাগ
- শারীরবিদ্যা বিভাগ
- অণুজীববিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্যবিধি বিভাগ
- ফার্মাকোলজি বিভাগ
- পরজীববিদ্যা বিভাগ
- রোগবিদ্যা বিভাগ
- মেডিসিন বিভাগ
- সার্জারি ও ধাত্রীবিদ্যা বিভাগ
কৃষি অনুষদ
- কৃষি অর্থনীতি বিভাগ
- মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ
- পতঙ্গবিজ্ঞান বিভাগ
- উদ্যানবিদ্যা বিভাগ
- উদ্ভিদের রোগবিদ্যা বিভাগ
- ফসল উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ
- জেনেটিক্স এবং উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ
- কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগ
- কৃষি রসায়ন বিভাগ
- জীববিজ্ঞান বিভাগ
- পদার্থবিদ্যা বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- ভাষা বিভাগ
- কৃষি বন বিভাগ
- বায়োপ্রযুক্তি বিভাগ
- পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ
পশুপালন অনুষদ
- পশু প্রজনন ও জেনেটিক্স বিভাগ
- পশু বিজ্ঞান বিভাগ
- পশু পুষ্টি বিভাগ
- পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগ
- দুগ্ধ বিজ্ঞান বিভাগ
কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ
- কৃষি অর্থনীতি বিভাগ
- কৃষি অর্থ বিভাগ
- কৃষি পরিসংখ্যান বিভাগ
- সহযোগিতা ও বিপণন বিভাগ
- গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরী অনুষদ
- খামার কাঠামো বিভাগ
- খামার শক্তি ও যন্ত্রপাতি বিভাগ
- সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- খাদ্য প্রযুক্তি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগ
- কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং গণিত বিভাগ
মৎসবিজ্ঞান অনুষদ
- মৎস্য জীববিজ্ঞান ও জেনেটিক্স বিভাগ
- অ্যাকক্যাকালচার বিভাগ
- মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ
- মৎস্য প্রযুক্তি বিভাগ
স্নাতক ডিগ্রিসমূহ
- ডক্টর অব ভেটেনারী মেডিসিন (DVM);
- ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন এগ্রিকালচার (BSc in Ag (Hons));
- ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন এনিম্যাল হাজব্রেন্ডী (BSc in Animal Husbundry(Hons));
- ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন এগ্রিকালচারাল ইকোনমিক্স (BSc in Ag Econ(Hons));
- ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং (BSc in Agricultural Engineering);
- ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং (BSc in Food Engineering)
- ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন Fisheries (BSc in Fisheries)
আবাসিক হলসমুহ
ছাত্র হলসমুহ
- ঈশা খাঁ হল
- শাহজালাল হল
- শহীদ শামসুল হক হল
- শহীদ নাজমুল আহসান হল
- আশরাফুল হক হল
- শহীদ জামাল হোসেন হল
- হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল
- ফজলুল হক হল
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল
ছাত্রী হলসমুহ
- সুলতানা রাজিয়া হল
- তাপসী রাবেয়া হল
- শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হল
- বেগম রোকেয়া হল
বিভিন্ন সংগঠন
- সাংবাদিক সমিতি
- বাকৃবি রোভার স্কাউট,
- রোটার্যাক্ট ক্লাব,
- বাকৃবি ডিবেটিং সংঘ
- বিনোদন সংঘ
- ত্রিভুজ সাংস্কৃতিক সংগঠন
- অংকুর,
- পদচিহ্ন,
- ঘাসফুল
- হাসিমুখ
- বাকৃবি ফটোগ্রাফিক সোসাইটি
- বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র বাকৃবি শাখা পাঠচক্র
- বাউ সাইক্লিষ্টস্
- বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
ছাত্র সংগঠন
- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
- জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
- সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট
- বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
গবেষনায় সাফল্য
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শস্যের জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর মধ্যে বাউ-৬৩, বাউকুল, বাউধান-২, নামে উফশী ধান জাত- সম্পদ ও সম্বল, বাউ-এম/৩৯৫, বাউ-এম/৩৯৬ নামে ৪টি উফসি সরিষা জাত, ডেভিস, ব্র্যাগ, সোহাগ, জি-২ ও বিএস-৪ নামে ৫টি সয়াবিন জাত, কমলা সুন্দরী ও তৃপ্তি নামে আলুর জাত, লতিরাজ, বিলাসী ও দৌলতপুরী নামে তিনটি মুখীকচুর জাত, কলা ও আনারস উৎপাদনের উন্নত প্রযুক্তি, রাইজোবিয়াম জৈব সার উৎপাদন প্রযুক্তি, সয়েল টেস্টিং কিট, পেয়ারা গাছের মড়ক নিবারণ পদ্ধতি, বীজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সহজ পদ্ধতি, অ্যারোবিক পদ্ধতিতে ধান চাষ প্রযুক্তি, শুকানো পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ, পশু খাদ্য হিসেবে ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধির কলাকৌশল। আফ্রিকান ধৈঞ্চার অঙ্গজ প্রজনন, এলামনডা ট্যাবলেট, আইপিএম ল্যাব বায়োপেস্টিসাইড, বিলুপ্তপ্রায় শাকসবজি ও ফলের জার্মপ্লাজম সংরক্ষণ ও মলিকুলার বৈশিষ্ট সনাক্তকরণ কলাকৌশল, মোরগ-মুরগির রাণীক্ষেত রোগ ও ফাউলপক্সের প্রতিষেধক টিকা উৎপাদন, হাঁসের প্লেগ ভ্যাকসিন ও হাঁস-মুরগির ফাউল কলেরার ভ্যাকসিন তৈরি, রাণীক্ষেত রোগ সহজেই সনাক্তকরণে মলিকুলার পদ্ধতির উদ্ভাবন, মুরগির স্যালমোনোসিস রোগ নির্ণয় প্রযুক্তি; হাওর এলাকায় হাঁস পালনের কলাকৌশল, কমিউনিটি ভিত্তিক উৎপাদনমুখী ভেটেরিনারি সেবা, গবাদিপশুর ভ্রুণ প্রতিস্থাপন, ছাগল ও মহিষের কৃত্রিম প্রজনন, কৃত্রিম প্রজননে ব্যবহৃত ষাঁড়ের আগাম ফার্টিলিটি নির্ণয়, গাভীর উলানফোলা রোগ প্রতিরোধ কৌশল, হরমোন পরীক্ষার মাধ্যমে গরু ও মহিষের গর্ভ নির্ণয়, সুষম পোল্ট্রি খাদ্য, গো-খাদ্য হিসেবে খড়ের সঙ্গে ইউরিয়া-মোলাসেস ব্লক ব্যবহার, হাঁস-মুরগির উন্নত জাত উৎপাদন, কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন অনুসন্ধানী গবেষণা তৎপরতার মাধ্যমে টেকসই শস্যবীমা কার্যক্রম, ক্ষুদ্র সেচ কার্যক্রমের উন্নয়ন, পশুসম্পদ উপখাত ও ডেয়রি উৎপাদনের উন্নয়ন, স্বল্প ব্যয়ে সেচনালা তৈরি, উন্নত ধরনের লাঙ্গল ও স্প্রে মেশিন, বাকৃবি জিয়া সার-বীজ ছিটানো যন্ত্র, সোলার ড্রায়ার, উন্নত ধরনের হস্তচালিত টিউবয়েল পাম্প, জ্বালানি সাশ্রয়ী উন্নতমানের দেশি চুলা, মাগুর ও শিং মাছের কৃত্রিম প্রজননের কলাকৌশল, ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ পদ্ধতি, খাচায় পাঙ্গাস চাষ, পেরিফাইটন বেজড মৎস্যচাষ, দেশি পাঙ্গাসের কৃত্রিম প্রজনন, ডাকউইড দিয়ে মিশ্র মৎস্যচাষ, মাছের জীবন্ত খাদ্য হিসেবে টিউবিফিসিড উৎপাদনের কলাকৌশল, পুকুরে মাগুর চাষের উপযোগী সহজলভ্য মৎস্যখাদ্য তৈরি, শুক্রাণু ক্রয়োপ্রিজারভেশন প্রযুক্তি, স্বল্প ব্যয়-মিডিয়ামে ক্লোরেলার চাষ, মাছের পোনা পালনের জন্য রটিফারের চাষ, মাছের রোগ প্রতিরোধকল্পে ঔষধি গাছের ব্যবহার এবং মলিকুলার পদ্ধতি ব্যবহার করে মাছের বংশ পরিক্রম নির্ণয়, তারাবাইম, গুচিবাইম ও বাটা মাছের কৃত্রিম প্রজনন, ধানক্ষেতে মাছ ও চিংড়ি চাষ, পুকুরে মাছ চাষ, সহজলভ্য মাছের খাদ্য তৈরি, একোয়াপনিক্সের মাধ্যমে মাছ এবং সবজি উৎপাদন, মাছের বিকল্প খাদ্যের জন্য ব্লাক সোলজার ফ্লাই চাষ এবং কচি গমের পাউডার উৎপাদন।